মোহনপুরে আ.লীগ নেতার ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ, হুমকিতে পরিবেশ

- আপডেট সময় : ১০:১৭:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৫৫১ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনের তোয়াক্কা না করে রাজশাহীর মোহনপুরের আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতাদের ইটভাটাগুলোতে অবাধে কাঠ ও লাকড়ি পোড়ানো হচ্ছে। সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে এসব কাঠ সংগ্রহ করায় হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। এছাড়া এগুলো ইটভাটার নিম্ন মানের ইট তৈরি করে, তা সাধারণ মানুষকে ঠাকানোসহ সরকারি উন্নয়ন কাজে সরবরাহ করছেন তারা।
এলাকাবাসি সূত্রে ও সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মোহনপুর উপজেলায় ১১ টি ইটভাটা রয়েছে, এদের মধ্যে অনেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম মেনে উন্নত মানের ইট তৈরির কাজ করলেও আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকা ইট ভাটার মালিকারা এখনো তাদের দাপট ধরে রাখতে ইচ্ছা মতো ইটভাটায় পুড়াচ্ছে বিভিন্ন গাছের কাঠ। এদের মধ্যে ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের ঝালপুকুরিয়া গ্রামে স্কুল ও বসবাড়ির পাশে কৃষির জমির মধ্যে এ.জি.আই ব্রিকস নামের ইটভাটায় কাঠ পুঠিয়ে ইট তৈরি করছে আজিজুল ইসলাম নামের আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা। সে রায়ঘাটি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তার ভাষ্য ইট তৈরিতে অনেক খরচ, আর কয়লার থেকে গাছের কাঠের মূল্য কম, তাই এটা দিয়ে চালিয়ে দিচ্ছি।
এদিকে, মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তকেদার গ্রামে মোটা সাইজের গাছ ভাটার জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দিয়ে পুড়িয়ে নিম্ন মানের টাটা ব্রিকস নামে তৈরি করছে আব্দুল কুদ্দুস নামের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা। সে বিগত দিনে সকল নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের বিজয়ের লক্ষ্যে অর্থ দিয়ে বাহিনী পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আমার ইটভাটা বন্ধ হয়ে যায়। আমি বর্তমানে নানান ভাবে ম্যানেজ করে ইট ভাটা চালু করেছি। ইতিমধ্যে লাখ টাকা প্রশাসনকে জরিমানা ও দিয়েছি, তবুও গাছের কাঠ ছাড়া আমি কয়লা কিনে ইট তৈরি করতে পারবোনা। এসময় তার ইটের অর্ডার আসলে ম্যানেজার সহ কর্মচারিদের বলে, ধোপাঘাটা এলাকায় এক ঠিকাদার পিক ইট নিবে, সেখানে কিছু ভাংড়ি মানের ইট মিশ্রণ করে গাড়ি পাঠিয়ে দিতে হবে।
এগুলো ইটভাটার শ্রমিকেরা জানান, ভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়েক হাজার মণ কাঠের স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং কাঠ চেরাইয়ের জন্য ইটভাটার মধ্যে করাতকল স্থাপন করা হয়। এসব কাঠের জোগানের বেশির ভাগই আসে স্থানীয় বাড়িঘরের আশপাশে লাগানো গাছ কেনার মাধ্যমে।
ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত আইন ২০১৩-এর ৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, আমরা মোহনপুরে অভিযান পরিচালনা করেছি। আবারো আইন অবমাননা করে ইটভাটায় গাছের কাঠ পোড়ায়, তাহলে ভাটামালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, যে আইন অমান্য করে অপরাধ করে, আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।